আখতারুজ্জামান মুহাম্মাদ সুলাইমান
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَشۡتَرِي لَهۡوَ ٱلۡحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ بِغَيۡرِ عِلۡمٖ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاۚ﴾ [لقمان: ٦]
“আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে। আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে।” [সূরা লুকমান: ৬]
বেশির ভাগ তাফসীরকারকগণ বলেন, আল্লাহ তা‘আলা لَهۡوَ ٱلۡحَدِيثِ বলতে গানকে বুঝিয়েছেন। ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: তা হচ্ছে গান। ইমাম হাসান বসরী রহ. বলেন: তা গান ও বাদ্যের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে।
ইসলামের
পথে এসো..Islamer Pothe Asho
|
আল্লাহ তা‘আলা শয়তানকে সম্বোধন করে বলেন:
﴿وَٱسۡتَفۡزِزۡ مَنِ ٱسۡتَطَعۡتَ مِنۡهُم بِصَوۡتِكَ﴾ [الاسراء: ٦٤]
“তোমার কন্ঠ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত কর।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৬৪]
গান-বাজনার ক্ষতিকর দিকসমূহ:
ইসলাম কোনো জিনিসের মধ্যে ক্ষতিকারক কোনো কিছু না থাকলে তাকে হারাম করে নি। গান ও বাজনার মধ্যে নানা ধরনের ক্ষতিকর জিনিস রয়েছে। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এ সম্বন্ধে বলেন:
বাজনা হচ্ছে নফসের মদস্বরূপ। মদ যেমন মানুষের ক্ষতি করে, বাদ্যও মানুষের সেই রকম ক্ষতি করে। যখন গান-বাজনা তাদের আচ্ছন্ন করে ফেলে, তখনই তারা শির্কে পতিত হয়। আর তখন তারা ফাহেশা কাজ ও যুলুম করতে উদ্যত হয়। তারা শির্ক করতে থাকে এবং যাদের কতল করা নিষেধ তাদেরকেও কতল করতে থাকে। যিনা করতে থাকে। যারা গান-বাজনা করে তাদের বেশীর ভাগের মধ্যেই এই তিনটি দোষ দেখা যায়। তাদের বেশীর ভাগই মুখ দিয়ে শিস দেয় ও হাততালি দেয়।
শির্কের নিদর্শন: তাদের বেশির ভাগই তাদের শাইখ (পীর) অথবা গায়কদের আল্লাহরই মতোই ভালোবাসে অথবা আরো অধিক।
অশ্লীলতা: গান হল যেনার রাস্তাস্বরূপ। এর কারণেই গানের মজলিসে বেশীর ভাগ ফাহেশা তথা অশ্লীল কাজ অনুষ্ঠিত হয়। ষেখানে পুরুষ, বালক, বালিকা ও মহিলা চরম স্বধীন ও লজ্জাহীন হয়ে পড়ে। এভাবে গান শ্রবণ করতে করতে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনে। তখন তাদের জন্য ফাহেশা কাজ করা সহজ হয়ে দাড়ায়, যা মদ্যপানের সমতুল্য কিংবা আরও অধিক।
কতল বা হত্যা: অনেক সময় গান শ্রবণ করতে করতে উত্তেজিত হয়ে একে অপরকে হত্যা করে ফেলে। তখন বলে: তার মধ্যে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, যে জন্য হত্যা করা ছাড়া উপায় ছিল না। তা থেকে বিরত থাকা তার ক্ষমতার বাইরে ছিল। আসলে এ সময়ে মজলিসে শয়তান উপস্থিত হয়। আর যাদের ওপর শয়তান বেশি শক্তিশালী তারা অন্যদের হত্যা করে ফেলে।
পথভ্রষ্টতা ও ক্ষতি: গান-বাজনা শ্রবণে অন্তরের কোনো লাভ হয় না, তাতে কোনো উপকারও নেই; বরঞ্চ ওতে আছে গোমরাহী এবং ক্ষতি, যা লাভের থেকেও বেশি ক্ষতিকর। যা রুহের জন্য ঐ রকম ক্ষতিকর যেমন মদ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ফলে যারা সঙ্গীত শ্রবণ করে, তাদের নেশা মদ্যপায়ীর নেশা থেকেও অনেক বেশি হয়। তারা ওতে যে মজা পায়, তা মদ্যপায়ীর থেকেও অনেক বেশি।
শয়তান তাদের নিয়ে খেলা করে: তখন এই অবস্থায় তারা আগুনে প্রবেশ করে, কেউ গরম লোহা শরীরের মধ্যে কিংবা জিহ্বায় প্রবেশ করায় অথবা এ জাতীয় কাজ করে। তারা সালাত আদায়ের সময় অথবা কুরআন তেলাওয়াতের সময় এই রকম অবস্থা প্রাপ্ত হয় না। কারণ এগুলো শরী‘আতসম্মত ইবাদত, ঈমানী কাজ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাজ, যা শয়তানকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর অন্যগুলো ইবাদতের নামে বিদ‘আত। এতে আছে শির্ক ও শয়তানী কাজ, দার্শনিকের কাজ। যাতে শয়তানরা সহজেই আকৃষ্ট হয়।
পোষ্টটি উপকারী মনে হলে অব্যশয় শেয়ার করবেন
No comments:
Post a Comment
Thank You