আখতারুজ্জামান মুহাম্মাদ সুলাইমান
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমস্ত মানুষকে এক আল্লাহর দিকে ডাকার জন্য। আর সাথে সাথে আউলিয়া কিংবা অন্যান্য নেককারদের অথবা গাইরুল্লাহর ইবাদত করা থেকে বিরত রাখার জন্য। এদের পূজা করা হয় মূর্তি, ভাস্কর অথবা ছবি বানিয়ে। এই দাওয়াত বহু পূর্ব হতে চালু হয়েছে, যখন আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হিদায়াতের জন্য তাঁর রাসূলদের প্রেরণ করা শুরু করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
ইসলামের পথে এসো..Islamer Pothe Asho |
﴿وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَۖ﴾ [النحل: ٣٦]
“আর অবশ্যই আমরা প্রত্যেক জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি এই বলে যে, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর, আর তাগুত (তাগুত হচ্ছে ঐ সমস্ত ব্যক্তি বা জিনিস যাদের ইবাদত করা হয় আল্লাহকে ছেড়ে, আর তাতে তারা রাজী খুশী থাকে) থেকে বিরত থাক।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৬]
এ সমস্ত মূর্তির কথা সূরা নূহ-তে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সবচেয়ে বড় দলিল হলো, ঐ মুর্তিগূলি ছিল ঐ যমানার সর্বোত্তম নেককারগণের। এ হাদীস ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে আল্লাহ তা‘আলার ঐ কথার ব্যাখ্যায়:
﴿وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ وَقَدۡ أَضَلُّواْ كَثِيرٗاۖ ٤﴾ [نوح: ٢٣، ٢٤]
“আর তারা বলল. তোমরা কোন অবস্থাতেই তোমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ কর না, আর ওদ্দা, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নাসরাকে কখনই পরিত্যাগ কর না। আর তারা তো অনেককেই গোমরাহ করেছে।” [সূরা নূহ, আয়াত: ২৩-২৪]
তিনি বলেন: তারা ছিলেন নূহ আলাইহিস সালামের কওমের নেককার বান্দা। যখন তারা মৃত্যুমুখে পতিত হন, তখন শয়তান তাদের গোপনে কুমন্ত্রনা দেয় যে, তারা যে সমস্ত স্থানে বসত সেখানে তাদের মূর্তি বানিয়ে রাখ আর ঐ মূর্তিদেরকে তাদের নামেই পরিচিত কর। তখন তারা তাই করল; কিন্তু তখনও তাদের ইবাদত শুরু হয় নি। তারপর যখন ঐ যামানার লোকেরাও মারা গেল তখন তাদের পরের যমানার লোকেরা ভুলে গেল যে, কেন ঐ মূর্তিগুলির সৃষ্টি করা হয়েছিল। তখনই তাদের পুজা শুরু হয়ে গেল। (বুখারী, ৪৯২০)
এ ঘটনা থেকে শিক্ষা পাওয়া যায় যে, গাইরুল্লাহর ইবাদতের কারণগুলির একটি হলো, জাতীয় নেতাদের মূর্তি তৈরী করা। অনেকেরই ধারনা এ সময় মূর্তি, বিশেষ করে ছবি হারাম নয়; বরঞ্চ হালাল। কারণ, বর্তমানে কেউ ছবি বা র্মর্তির পূজা করে না; কিন্তু এটা কয়েকটি কারণে গ্রহণযোগ্য নয়:
বর্তমান যমানায়ও মূর্তি ও ছবির পূজা হয়ে থাকে। যেমন গির্জাসমূহে আল্লাহকে ছেড়ে ইসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর মাতা মারইয়ামের আলাইহিস সালামের ছবির পূজা হয়। এমনকি ক্রুশের সামনে তারা রুকুও করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের তৈলচিত্র তৈরী করা হয়েছে ইসা আলাইহিস সালাম ও তার মায়ের উপর, যা খুবই উচ্চ মুল্যে বিক্রি করা হয়। আর উহা ঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয় তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও ইবাদত করার জন্য।
এ সমস্ত ভাস্কর যা দুনিয়ার দিক দিয়ে উন্নত ও রুহানী দিক দিয়ে অনগ্রসর জাতি কিংবা জাতীয় নেতারা সম্মান প্রর্দশন করেন তাদের মস্তক হতে টুপি খুলে অথবা তাদের সম্মুখ দিয়ে যাবার সময় তাদের মাথা ঝুকিয়ে অতিক্রম করে। যেমন, আমেরিকায় জর্জ ওয়াশিংটনের ভাস্কর্য, ফ্রান্সে নিপোলিয়ানের মূর্তি, রাশিয়ায় লেলিন ও ষ্টালিনের ভাস্কর্যের সম্মুখে এবং এ জাতীয় ভাস্কর্য বড় বড় রাস্তায় স্থাপন করা হয়েছে। তাদের সম্মুখ দিয়ে অতিক্রমের সময় পথচারিরা মস্তক ছুকিয়ে সালাম দেয়। এমনকি এ ধরনের ভাস্কর্যের চিন্তা ভাবনা অনেক আরব দেশে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবেই তারা কাফেরদের অনুসরণ করতে উদ্যোগী হয়েছে আর আস্তে আস্তে রাস্তা ঘাটে এ রকম ভাস্কর্যের সৃষ্টি করেছে। এই সমস্ত ভাস্কর্য ও মূর্তি আরবের মুসলিম দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ওয়াজিব ছিল এ চাতীয় ভাস্কর্য তৈরী না করে ঐ ধন দৌলত মসজিদ-মাদরাসা, হাসপাতাল, সাহায্যসংস্থা ইত্যাদি তৈরির জন্য ব্যয় করা, যাতে এ উপকার সকলের নিকট পৌঁছে। যদিও তারা এটা তাদের নামে নামকরণ করুক না কেন তাতে কোনো ক্ষতি নেই।
আর এমন একদিন আসবে, যখন এই ভাস্কর্যগুলির সম্মুখে মস্তক অবনত করে সম্মান প্রদর্শন করা হবে এবং তাদের ইবাদত করা হবে। যেমনভাবে ইউরোপ, তুর্কী এবং অন্যান্য দেশে হচ্ছে। আর তাদের পূর্বে নূহ আলাইহিস সালাম-এর কওম তা করেছিল। তারা তাদের নেতাদের ভাস্কর্য তৈরী করেছিল; অতঃপর তাকে সম্মান করত ও ইবাদত করত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে হুকুম করে বলেন:
«لا تَدَعْ تِمْثَالاً إلاَّ طَمَسْتَهُ ولا قَبْرًا مُشْرِفًا إلاَّ سَوَّيْتَهُ». (رواه مسلم)
“যেখানে যত মুর্তিই দেখ না কেন, তাকে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে ফেল। আর যত উচুঁ কবর দেখবে, তাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে।” (মুসলিম) অন্য রেওয়ায়েতে আছে, যত ছবি দেখবে তাকে টুকরা টুকরা করে ফেলবে।
পোষ্টটি উপকারী মনে হলে অব্যশয় শেয়ার করবেন
islamic post...........islamic post...........islamic post...........
islamic post...........islamic post...........islamic post...........
No comments:
Post a Comment
Thank You