শরীরের মধ্যে লোহার শলাকা, না রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আর না সাহাবীরা প্রবেশ করাতেন। যদি এ কাজ উত্তমই হত তবে অবশ্যই তারা এতে অগ্রগামী হতেন। বরঞ্চ উহা সূফী পীর ও বিদ‘আতীদের কাজ। আমি তাদেরকে মসজিদে একত্রিত হতে দেখেছি। তাদের সাথে তবলা জাতীয় যন্ত্র দফ ছিল। তারা গান করছিল: আমাদের মদের গ্লাস এনে দাও এবং তা আমাদের পান করাও।
ইসলামের
পথে এসো..Islamer Pothe Asho
|
আল্লাহর ঘরে বসে মদ জাতীয় দ্রব্যের উচ্চারণ করতে তাদের লজ্জাও হয় না। তারপর উচ্চ আওয়াজে দফ বাজাচ্ছিল এবং উচ্চ আওয়াজে গাইরুল্লাহর নিকট বিপদে উদ্ধার চাচ্ছিল। আর বলছিল: হে দাদা! ... এভাবে শয়তান তাদের ধোকায় নিপতিত করছিল। তারপর আর একজন তার জামা খুলে একটি লোহার শিক হাতে নিয়ে তার পাঁজরের মধ্যে প্রবেশ করাল। তারপর আর একজন উঠে দাড়িয়েঁ কাঁচের একটি গ্লাস ভেঙ্গে তা দাঁত দিয়ে চুর্ণ বিচুর্ণ করছিল। তখন আমি মনে মনে বললাম, এরা যা বলছে তা যদি সত্যিই সহীহ হয় তবে যেন তারা ঐ ইয়াহূদীদের সাথে যুদ্ধ করে যারা আমাদের ভূমি জবর দখল করে রেখেছে আর আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে। এসব কাজ যে সব শয়তানরা সেখানে উপস্থিত হয় তারা তাদের সাহায্য করে। কারণ, ঐ লোকেরা আল্লাহর স্মরণ হতে দূরে রয়েছে। আর যখন তারা তাদের পূর্ব পুরুষদের নিকট বিপদে উদ্ধার চায়, তখন তারা শির্কের মধ্যে লিপ্ত হয়। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَن يَعۡشُ عَن ذِكۡرِ ٱلرَّحۡمَٰنِ نُقَيِّضۡ لَهُۥ شَيۡطَٰنٗا فَهُوَ لَهُۥ قَرِينٞ ٣٦ وَإِنَّهُمۡ لَيَصُدُّونَهُمۡ عَنِ ٱلسَّبِيلِ وَيَحۡسَبُونَ أَنَّهُم مُّهۡتَدُونَ ٣٧﴾ [الزخرف: ٣٦، ٣٧]
“আর যে পরম করুণাময়ের যিকির থেকে বিমুখ থাকে, আমরা তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে এক শয়তানের সঙ্গী হয়ে যায়। আর নিশ্চয়ই তারাই (শয়তান) মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা দেয়। অথচ মানুষ মনে করে তারা হিদায়েত প্রাপ্ত।” [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৩৬-৩৭]
আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য শয়তানকে নির্দিষ্ট করে দেন, যাতে তারা আরও গোমরাহ হতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
﴿ قُلۡ مَن كَانَ فِي ٱلضَّلَٰلَةِ فَلۡيَمۡدُدۡ لَهُ ٱلرَّحۡمَٰنُ مَدًّاۚ﴾ [مريم: ٧٥]
“বলুন, যে বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাকে পরম করূণাময় প্রচুর অবকাশ দেবেন।” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৭৫]
শয়তান যে তাদের সাহায্য করে, এতে আবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ, সুলাইমান আলাইহিস সালাম এক জিন্নের নিকট সাহায্য চেয়েছিলেন, রাণী বিলকীসের সিংহাসন উঠিয়ে আনার জন্য। এ সম্বন্ধে কুরআনে আছে,
﴿ قَالَ عِفۡرِيتٞ مِّنَ ٱلۡجِنِّ أَنَا۠ ءَاتِيكَ بِهِۦ قَبۡلَ أَن تَقُومَ مِن مَّقَامِكَۖ وَإِنِّي عَلَيۡهِ لَقَوِيٌّ أَمِينٞ ٣٩ ﴾ [النمل: ٣٩]
“এক শক্তিশালী জিন্ন বলল, আপনি আপনার স্থান থেকে উঠার পূর্বেই আমি তা এনে দিব। আমি নিশ্চয় এ ব্যাপারে শক্তিশালী ও আমানতদার।” [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৩৯]
যারা হিন্দুস্থানে গিয়েছেন, যেমন ভ্রমনবিদ ইবন বতুতা কিংবা অন্যান্যরা। তারা অগ্নি উপাসকদের লোহার শিক শরীরে প্রবেশ করানো হতেও বেশি ভযংকর ঘটনা দেখেছে, যদিও তারা ছিল কাফের। তাই এ ঘটনা কোনো কারামত বা অলৌকিক ঘটনা নয়। বরঞ্চ তা ঐ সমস্ত শয়তানদের ঘটনা যারা এভাবে একত্রিত হয় গান বাজনার আসরে। দেখা যায়, বেশীর ভাগ লোক যারা শরীরে শিক প্রবেশ করায়, তারা নানা ধরনের পাপে লিপ্ত। এমনকি প্রকাশ্যভাবে তারা আল্লাহর সাথে শির্কে লিপ্ত থাকে। কারণ তারা তাদের মৃত পুর্বপুরুষদের নিকট সাহায্য ভিক্ষা করে। তাহলে কীভাবে কারামতের অধিকারী অলী আল্লাহ হতে পারে?
আল্লাহ তা‘আলা ওলীদের সম্বন্ধে বলেন:
﴿أَلَآ إِنَّ أَوۡلِيَآءَ ٱللَّهِ لَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ٦٢ ﴾ [يونس: ٦٢]
“শুনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই, আর তারা পেরেশানও হবে না। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬২]
অলী হচ্ছেন ঐ মুমিন বান্দা, যিনি সর্বদা এক আল্লাহর নিকট সাহায্য ভিক্ষা করেন। আর মুত্তাকি হচ্ছেন ঐ ব্যক্তি যিনি আল্লাহর সাথে পাপ ও শির্ক করা থেকে বিরত থাকেন। এ সমস্ত অলীদের জীবনে হঠাৎ করে কোনো কারামত ঘটে যায়। আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মানুষের দাবী বা লোক দেখানোর জন্য এটা ঘটে না।
বর্তমান জামানায় গান-বাজনা:
বর্তমান জামানায় বেশির ভাগ গান হয় বিয়ের মজলিসে অথবা অন্য কোনো উৎসবে, রেডিও ও টেলিভিশনে। এগুলোর বেশির ভাগই ভালোবাসা, মিলনাকাংখা, চুমু, দেখা-সাক্ষাৎ ইত্যাদির ওপরে ভিত্তি করে রচিত। তাতে থাকে মুখের, কপালের এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রতঙ্গের বর্ণনা, যা যুবকদের মনে মিলনাকাংখা জাগিয়ে তোলে আর তাদের অশ্লীল কাজ ও যেনা করতে উদ্বুদ্ধ করে এবং তাদের চরিত্র নষ্ট করে।
যখন গায়ক গায়িকারা গান বাজনার নামে একত্রিত হয়, তখন ঐ সমস্ত ধন দৌলত ব্যয় হয়, যা সংস্কৃতির নামে জাতীয় তহবিল হতে চুরি করা হয়। তারপর ঐ ধন দৌলত নিয়ে ইউরোপ আমেরিকা যেয়ে বাড়ি-গাড়ী ইত্যাদি খরিদ করে। তারা তাদের অশ্লীল গান-বাজনা দিয়ে জাতীয় চরিত্র নষ্ট করে দেয়। তাদের অশ্লীল ও নগ্ন ছবি দিয়ে যুবকদের চরিত্র নষ্ট করে। ফলে, আল্লাহকে ছেড়ে তারা তাদেরকে ভালোবাসতে থাকে। এমনকি ১৯৬৭ সালে ইয়াহূদীদের সাথে যুদ্ধের সময় রেডিও হতে বলা হচ্ছিল, তোমরা যুদ্ধে অগ্রসর হতে থাক; কারণ তোমাদের সাথে অমুক অমুক গায়িকা আছে। ফলে তারা পাপিষ্ট ইয়াহূদীদের সাথে চরমভাবে বিপর্যস্ত ও পরাজিত হয়। বরঞ্চ তাদের বলা উচিৎ ছিল, তোমরা আল্লাহর সাহায্য নিয়ে সম্মুখে অগ্রসর হতে থাক, তিনি তোমাদের সাথে আছেন। এমনকি এক গায়িকা এ ঘোষণা দিয়েছিল যে, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পূর্বে তার প্রতি মাসে কায়রোয় যে মাসিক উৎসব হতো, এ বৎসর তা সে তেলআবিবে করবে, যদি তারা জয়যুক্ত হয়। অন্যদিকে আল্লাহর সাহায্যের জন্য ইয়াহূদিরা যুদ্ধের পর বায়তুল মুকাদ্দাসের গোনাহ মোচনের দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছিল।
পোষ্টটি উপকারী মনে হলে অব্যশয় শেয়ার করবেন
No comments:
Post a Comment
Thank You