Breaking News
recent

islamic post...........ছবি ও মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম পর্ব-২

ছবি ও মূর্তির ক্ষতিকর দিকসমূহ:
ইসলামে যত জিনিসকেই হারাম করা হয়েছে তা দীনের ক্ষেত্রে কিংবা চরিত্রের ক্ষেত্রে কিংবা সম্পদ অথবা অন্যান্য কোনো ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করেই করা হয়েছে। আর সত্যিকারের মুসলিম সর্বদা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুমের কাছে নিজেকে অবনত করে। যদিও সে ঐ হুকুমের হাকীকত নাও জানতে পারে তথাপিও। মূর্তি ও ছবির অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ঐ গুলো হচ্ছে:
১। আকীদা ও দীনের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই যে, ছবি মূর্তি বহু লোকেরই আকীদা নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ, খ্রিষ্টানরা ঈসা ও মারইয়াম ‘আলাইহিমাস সালাম এবং ক্রুশের ছবির পূজা করে। ইউরোপ ও আমেরিকায় তাদের নেতাদের মূর্তির পূজা করা হয়।
ইসলামের পথে এসো..Islamer Pothe Asho

 আর ঐ মূর্তিগুলির সামনে নিজেদের মস্তক সমূহকে অবনত করে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে। তাদের সাথে পা মিলিয়ে চলছে কোনো কোনো মুসলিম ও আরব দেশ। তারাও তাদের নেতাদের মূর্তি ও ভাস্কর্য স্থাপন করেছে। তারপর কোন কোন সূফি পীরদের মধ্যে এর প্রবনতা দেখা দিয়েছে। তারা তাদের পীর মাশায়েখদের ছবি, সালাত আদায় করার সময়, তাদের সম্মুখে স্থাপন করে এই নিয়তে যে, এতে তাদের মধ্যে খুশু বা আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হয়। আর তাদের মাশায়েখরা যখন যিকির করতে থাকে, তখন তাদের ছবি উত্তোলন করে। ফলে তাদের মুরাকাবা ও মুশাহাদা দেখাতে বিঘ্ন ঘটায়। কোনো কোনো স্থানে তাদের ছবিকে সম্মান দেখিয়ে লটকিয়ে রাখে এ ধারনা করে যে, এতে বরকত হয়।
সেই রকম অনেক গায়ক-গায়িকা ও শিল্পীদের ছবি তাদের অনুসারীরা ভালোবাসে। তারা ওদের ছবি সংগ্রহ করে সম্মান এবং পবিত্রতা দেখানোর জন্য ঘরে অথবা অন্যত্র ঝুলিয়ে রাখে। ১৯৬৭ সালে ইয়াহূদিদের সাথে যুদ্ধে এ জাতীয় কাজ ঘটেছিল। ফলে তাদের পরাজয় ঘটে। কারণ, তাদের সাথে গায়করা ছিল, আল্লাহ ছিলেন না। ফলে ঐ গায়ক গায়িকারা কোনো উপকার করতে পারে নি। বরঞ্চ এদের কারণেই তাদের পরাজয় ঘটেছিল। হায়! যদি আরবগণ এ ঘটনা হতে শিক্ষা গ্রহণ করে সর্বান্তকরণে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করত, তবে তারা আল্লাহর সাহায্য পেত।

২। ছবি ও মূর্তি যে কীভাবে যুবক, যুবতিদের স্বভাব চরিত্র নষ্ট করছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রাস্তাঘাট বাড়িঘর পূর্ণ হয়ে আছে এই ধরণের তথাকথিত শিল্পীদের ছবিতে যারা নগ্ন, অর্ধ নগ্ন অবস্থায় ছবি উঠিয়েছে। ফলে যুবকরা তাদের প্রতি আশেক হয়ে পড়েছে। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নানা ধরনের ফাহেশা কাজে তারা লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তাদের চরিত্র ও অভ্যাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা না দীন সম্বন্ধে চিন্তা করছে আর না বাইতুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার চিন্তা ভাবনা করছে। না সম্মান, আর না জিহাদের চিন্তা ভাবনা করে। আজকের যামানায় ছবির প্রচার খুবই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে মহিলা ও শিল্পীদের ছবি। এমনকি জুতার বাক্স, পত্রিকা, পাক্ষিক, বই পুস্তক, টেলিভিশন ইত্যাদিতেও। বিশেষ করে যৌন উত্তেজক সিনেমা, ধারাবাহিক নাটক এবং ডিটেকটিভ চলচিত্রসমূহে। অনেক ধরনের কার্টুন ছবিতেও, যাতে আল্লাহ পাকের সৃষ্টিকে বিকৃত করা হচ্ছে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা লম্বা নাক, বড় কান কিংবা বিরাট বিরাট চোখ সৃষ্টি করেন নি, যা তারা এই ছবি সমূহে অংকন করে থাকে। বরঞ্চ আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে অতি উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছেন।

৩। ছবি ও মূর্তির ক্ষেত্রে যে ধন দৌলত নষ্ট হয়, প্রকাশ্যভাবে তা সকলেরই গোচরীভূত হয়। এ জাতীয় ভাস্কর মূর্তিসমূহ সৃষ্টি করার জন্য হাজার হাজার, লাখ লাখ টাকা ব্যয় করা হয় শয়তানের রাস্তায়। বহু লোক এ জাতীয় ঘোড়া, উট, হাতি, মানুষের মূর্তি ইত্যাদি ক্রয় করে তাদের ঘরে নিয়ে কাচেঁর আলমারীতে সাজিয়ে রাখে। আবার অনেকে তাদের মাতা-পিতা বা পরিবারের লোকদের ছবি দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখে। এ সমস্ত কাজে যে ধন দৌলত তারা ব্যয় করে তা যদি গরীব মিসকীনদের মাঝে দান সদকা করত, তবে মৃতের রূহ তাতে শান্তি পেত। এর থেকেও লজ্জাকর ঘটনা হলো, কেউ কেউ বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে যে ছবি তোলে তা ড্রইং রুমে ঝুলিয়ে রাখে অন্যদের দেখানোর জন্য। মনে হয় যেন তার স্ত্রী তার একার নয়; বরঞ্চ তা সকলেরই।
ছবি ও মূর্তির কি একই হুকুম:

অনেকে এ ধারণা করে যে, জাহেলিয়াত যমানায় যে সমস্ত মূর্তি তৈরী করা হত একমাত্র ঐ গুলিই হারাম। এতে বর্তমান যামানার আধুনিক ছবি অর্ন্তভুক্ত নয়। এটা বড়ই আবাক হওয়ার কথা। মনে হচ্ছে, তারা যেন ছবিকে হারাম করে যে সমস্ত হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে তা শ্রবণই করে নি। তার মধ্য থেকে কয়েকটি হাদীস নিম্নে বর্ণিত হলো:

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা একটি ছোট বালিশ ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি আঁকা ছিল। ঘরে প্রবেশের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দৃষ্টি এতে পতিত হলে তিনি আর ঘরে প্রবেশ করলেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর মুখমণ্ডল দেখেই তা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন: আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট তওবা করছি। আমি কি গুনাহ করেছি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন: এ ছোট বালিশটি কোথায় পেলে? তিনি বললেন: আমি এটা এ জন্য খরিদ করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম করতে পারেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: যারা এ সমস্ত ছবি অংকন করেছে কিয়ামতের মাঠে তাদেরকে ‘আযাব দেওয়া হবে। তাদের বলা হবে: তোমরা যাদের সৃষ্টি করেছিলে. তাদের জীবিত কর। অতঃপর তিনি বললেন: যে ঘরে ছবি আছে সে ঘরে ফেরেস্তাগণ প্রবেশ করেন না। (বুখারী ও মুসলিম)

তিনি আরো বলেছেন:
«أشَدُّ النَّاسِ عَذابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِيْنِ يُضَاهُوْنَ بِخَلْقِ اللهِ». (متفق عليه)
“কিয়ামতের মাঠে ঐ সমস্ত লোকেরা (যারা ছবি আঁকে তারা আল্লাহর সৃষ্টির মতোই কিছু করতে উদ্যত হয়।) সবচেয়ে বেশী ‘আযাব ভোগ করবে যারা আল্লাহর সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
সহীহ বুখারীতে বর্ণিত আছে:
«أنَّ النَّبيَّ صلي الله عليه وسلم لَمَّا رأي الصُّوَرَ في البيتِ لَمْ يَدْخُلْ حتّي مُحِيَتْ». (رواه البخاري)
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো ঘরে ছবি দেখলে, তা সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত ঐ ঘরে প্রবেশ করতেন না।” (সহীহ বুখারী)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাড়ীতে ছবি ঝুলাতে নিষেধ করেছেন আর অন্যদের তা আঁকতে কিংবা তোলতে নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী)
যে সমস্ত ছবি বা মূর্তি জায়েয:

গাছপালা, চন্দ্র, তারকা, পাহাড় পর্বত, পাথর, সাগর, নদনদী, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, পবিত্র স্থানের ছবি যেমন কাবাঘর মদীনা শরীফ, বাইতুল মোকাদ্দাস, বা অন্যান্য মসজিদের ছবি, যা কোনো মানুষ বা প্রাণী নয় তার ছবি উঠানো কিংবা ভাস্কর বানানো জায়েয। দলীল: এ সম্বন্ধে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: যদি তোমাকে ছবি বা মূর্তি বানাতেই হয়, তবে কোনো বৃক্ষ বা এমন জিনিসের ছবি আঁক যাদের জীবন নেই।

পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা এ জাতীয় কাজে এটা জায়েয অতিশয় প্রয়োজনের খাতিরে।

হত্যাকারী বা অপরাধীদের ছবি তোলা জায়েয, যাতে করে তাদের ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়। সেইরকম বিজ্ঞানের প্রয়োজনে যা তোলা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছবি, যে সম্বন্ধে কিছু আলেম জায়েযের ফতোয়া দিয়েছেন।
যেইরকম ছোট বাচ্চা মেয়েরা যদি ঘরে বানানো কাপড় দিয়ে পুতুল খেলে তা জায়েয যা পোশাক পরিহিত হবে পাক পরিস্কার হবে, যাতে করে কীভাবে শিশুকে পালন করতে হয় তা বাচ্চারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ফলে, বড় হয়ে মা হলে তা তাদের উপকারে আসবে।

দলিল: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আমার পুতুল মেয়ে নিয়ে খেলা করতাম।” (সহীহ বুখারী)
তবে বাচ্চাদের জন্য বিদেশী কোনো পুতুল খরিদ করা জায়েয নেই। বিশেষ করে ঐ সমস্ত পুতুল যা নগ্ন কিংবা বেপর্দা অবস্থায় আছে। যদি এটা দ্বারা বাচ্চারা খেলাধূলা করে তবে তা থেকে তারা অনুকরণ করে সেই মতো চলতে তারা উদ্যাগী হবে। আর এভাবেই সমাজকে নষ্ট করে দিবে। অধিকন্ত এ টাকা পয়সা কাফিরদের দেশে ও ইয়াহূদীদের নিকট পৌঁছবে।

ছবির মাথা যদি কেটে দেয়া হয় তবে তা ব্যবহার করার অনুমতি আছে। কারণ, ছবির মূল হলো মাথা। তাই যদি ছেদ করে দেয়া হয় তবে আর রুহ থাকল না। তখন তা জড় পদার্থের পর্যায়ে পড়ে। এ সম্বন্ধে জিবরীল আলাইহিস সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন:
«مُر برأسِ التِّمْثَالِ يَقْطَعُ فَيَصِيْرُ عَلي هَيئَةِ الشَّجَرَةِ وَمُرْ بِالسَّتْرِ فلْيَقْطَعْ فليَجْعَلْ مِنْهُ وِسَادَتَيْنِ تَوطأنِ». (رواه ابوداود)
“আপনি মূর্তির মাথা কেটে দিতে বলেন, ফলে উহা গাছের মত কিছু একটাতে পরিবর্তিত হবে। আর পর্দার কাপড়কে দু’টুকরা করে তা দ্বারা দু’টি বালিশ বানাতে বলেন।” (আবু দাউদ)


সমাপ্ত



পোষ্টটি উপকারী মনে হলে অব্যশয় শেয়ার করবেন

ইসলামের পথে এসো..Islamer Pothe Asho
islamic post...........islamic post...........islamic post...........islamic post...........islamic post...........islamic post...........
SAZU

SAZU

No comments:

Post a Comment

Thank You

Powered by Blogger.