অতীতে লূত আলাইহিস সালাম-এর জাতি পুংমৈথুনে অভ্যস্ত ছিল। তাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلُوطًا إِذۡ قَالَ لِقَوۡمِهِۦٓ إِنَّكُمۡ لَتَأۡتُونَ ٱلۡفَٰحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنۡ أَحَدٖ مِّنَ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢٨ أَئِنَّكُمۡ لَتَأۡتُونَ ٱلرِّجَالَ وَتَقۡطَعُونَ ٱلسَّبِيلَ وَتَأۡتُونَ فِي نَادِيكُمُ ٱلۡمُنكَرَۖ ﴾ [العنكبوت: ٢٨، ٢٩]
ইসলামের পথে এসো..Islamer Pothe Esho |
“লূতের কথা স্মরণ করুন! যখন তিনি তাঁর কওমকে বললেন, তোমরা নিশ্চয় এমন অশ্লীল কাজ করছ যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে আর কেউ করে নি, তোমরাই তো পুরুষে উপগত হচ্ছ, তোমরাই তো রাহাজানি করছ, তোমরাই তো ভরা মজলিসে অন্যায় কাজ করছ”। [সূরা আল-‘আনকাবুত, আয়াত: ২৮-২৯]
যেহেতু এ অপরাধ ছিল জঘন্য, অত্যন্ত মারাত্মক ও কদর্যপূর্ণ তাই আল্লাহ তা‘আলা লূত আলাইহিস সালামের জাতিকে একবারেই চার প্রকার শাস্তি দিয়েছিলেন। এ জাতীয় এতগুলো শাস্তি একবারে অন্য কোনো জাতিকে ভোগ করতে হয় নি। ঐ শাস্তিগুলো ছিল- তাদের চক্ষু উৎপাটন, উঁচু জনপদকে নিচু করে দেওয়া, অবিরাম কঙ্করপাত ও হঠাৎ নিনাদের ধ্বনি আগমন।
পুংমৈথূনের শাস্তি হিসেবে ইসলামী শরী‘আতের পণ্ডিতগণের অগ্রাধিকার প্রাপ্ত মত হলো, স্বেচ্ছায় যদি কেউ পুংমৈথুন করে তাহলে পুংমৈথুনকারী ও মৈথুনকৃত ব্যক্তি উভয়কেই তরবারীর আঘাতে শিরচ্ছেদ করতে হবে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মারফূ সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন,
«مَنْ وَجَدْتُمُوهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ، فَاقْتُلُوا الْفَاعِلَ، وَالْمَفْعُولَ بِهِ»
“তোমরা লূতের সম্প্রদায়ের ন্যায় পুংমৈথুনের কাজ কাউকে করতে দেখলে মৈথুনকারী ও মৈথুনকৃত উভয়কেই হত্যা করবে”।
মৈথুন বা সমকামিতার প্রাকৃতিক কুফলও কম নয়। এসব নির্লজ্জ বেহায়াপনার কারণেই আমাদের কালে এমন কিছু রোগ-ব্যাধি মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে যা পূর্বকালে ছিল না। বর্তমান পৃথিবীর মহাত্রাস ঘাতক ব্যাধি এইডস যার জ্বলন্ত উদাহরণ। এইডসই প্রমাণ করে যে, সমকামিতা রোধে ইসলামের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ যথার্থ হয়েছে।
১৮. শর‘ঈ ওযর ব্যতীত স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর শয্যা গ্রহণ অস্বীকার করা
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا المَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ»
“যখন কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে স্বীয় শয্যা গ্রহণ বা দৈহিক মিলনের জন্য আহবান জানায়, কিন্তু স্ত্রী তা অস্বীকার করায় স্বামী তার ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে রাত কাটায়, তখন ফিরিশতাগণ সকাল পর্যন্ত ঐ স্ত্রীর ওপর অভিশাপ দিতে থাকে”।
অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সুতরাং স্ত্রীর কর্তব্য হবে স্বামী ডাকামাত্রই তার ডাকে সাড়া দেওয়া। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إذا دعا الرجلُ امرأتَه إلى فراشِهِ فلتُجِبْ وإن كانتْ على ظهرِ قَتَبٍ»
‘যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সঙ্গে দৈহিক মিলনের জন্য ডাকবে, তখনই যেন সে তার ডাকে সাড়া দেয়। এমনকি সে যদি ক্বাতবের পিঠেও থাকে।’ ‘ক্বাতব’ হচ্ছে, উঠের পিঠে রাখা গদি যা সওয়ারের সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
স্বামীরও কর্তব্য হবে, স্ত্রী রোগাক্রান্ত্র, গর্ভবতী কিংবা অন্য কোনো অসুবিধায় পতিত হলে তার অবস্থা বিবেচনা করা। এতে করে তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় থাকবে এবং মনোমালিন্য সৃষ্টি হবে না।
১৯. শর‘ঈ কারণ ব্যতীত স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থনা করা
এমন অনেক স্ত্রীলোক আছে যারা স্বামীর সঙ্গে একটু ঝগড়া-বিবাদ হলেই কিংবা তার চাওয়া-পাওয়ার একটু ব্যত্যয় ঘটলেই তার নিকট তালাক দাবী করে। অনেক সময় স্ত্রী তার কোনো নিকট আত্মীয় কিংবা অসৎ প্রতিবেশী কর্তৃক এরূপ অনিষ্টকর কাজে প্ররোচিত হয়। কখনো সে স্বামীকে লক্ষ্য করে তার জাত্যভিমান উষ্কে দেওয়ার মত শব্দ উচ্চারণ করে। যেমন সে বলে, ‘যদি তুমি পুরুষ হয়ে থাক তাহলে আমাকে তালাক দাও’। কিন্তু তালাকের যে কি বিষময় ফল তা সবার জানা আছে। তালাকের কারণে একটি পরিবারে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। সন্তানরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এজন্য অনেক সময় স্ত্রীর মনে অনুশোচনা জাগতে পারে। কিন্তু তখন তো আর করার কিছুই থাকে না। এসব কারণে শরী‘আত কথায় কথায় তালাক প্রার্থনাকে হারাম করে সমাজের যে উপকার করেছে তা সহজেই অনুমেয়। সাওবান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ، فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ»
“কোনো মহিলা যদি বিনা দোষে স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থনা করে, তাহলে জান্নাতের সুগন্ধি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে”।
উক্ববা ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,
«الْمُنْتَزِعَاتُ وَالْمُخْتَلِعَاتُ هُنَّ الْمُنَافِقَاتُ»
“সম্পর্কছিন্নকারিণী ও খোলাকারিণী নারীগণ মুনাফিক”’।
হ্যাঁ যদি কোনো শর‘ঈ ওযর থাকে যেমন-স্বামী সালাত আদায় করে না, অনবরত নেশা করে কিংবা স্ত্রীকে হারাম কাজের আদেশ দেয়, অন্যায়ভাবে মারধর করে, স্ত্রীর শর‘ঈ অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করে। কিন্তু স্বামীকে নছীহত করেও ফেরানো যাচ্ছে না এবং সংশোধনেরও কোনো উপায় নেই সেক্ষেত্রে তালাক দাবী করায় স্ত্রীর কোনো দোষ হবে না। বরং দীন ও জীবন রক্ষার্থে তখন সে তালাক প্রার্থনা করতে পারে।
ইসলামের পথে এসো..Islamer Pothe Esho
পোষ্টটি উপকারী মনে হলে অব্যশয় শেয়ার করবেন
http://islamicpost11.blogspot.com
http://islamicpost11.blogspot.com
No comments:
Post a Comment
Thank You