Breaking News
recent

Islamic post..........সালাতুল আউওয়াবীন পর্ব-৬ (Islamic post)

চতুর্থ মত: 

আরেকদল আলেম এ সালাতকে বিদ‘আত বলেছেন। ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এটা বর্ণিত। হাদী, কাসেম ও আবু তালিব এ মতের অনুসারী। তাঁরা দলিল হিসেবে নিম্নোক্ত হাদীস ও আসার পেশ করেন, 
মুজাহিদ রহ. থেকে বর্ণিত, “তিনি বলেন,
دَخَلْتُ أَنَا وَعُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ المَسْجِدَ، فَإِذَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، جَالِسٌ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ، وَإِذَا نَاسٌ يُصَلُّونَ فِي المَسْجِدِ صَلاَةَ الضُّحَى، قَالَ: فَسَأَلْنَاهُ عَنْ صَلاَتِهِمْ، فَقَالَ: بِدْعَةٌ.
“আমি এবং ‘উরওয়া ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম, ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার হুজরার পাশে বসে আছেন। ইতিমধ্যে কিছু লোক মসজিদে সালাতুদ্দোহা আদায় করতে লাগল। আমরা তাঁকে এদের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, এটা বিদ’আত।”
হাকাম ইবন ‘আরাজ রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
سَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ صَلَاةِ الضُّحَى وَهُوَ مُسْنِدٌ ظَهْرَهُ إِلَى حُجْرَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَمَ، فَقَالَ: «بِدْعَةٌ وَنِعْمَتِ الْبِدْعَةُ.
“আমি ইমাম মুহাম্মদকে সালাতুদ-দুহা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের হুজরার সাথে পিঠ রেখে হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, এটা বিদ’আত। তবে উত্তম বিদ’আত।”
সালিম তার পিতা ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
لَقَدْ قُتِلَ عُثْمَانُ وَمَا أَحَدٌ يُسَبِّحُهَا وَمَا أَحْدَثَ النَّاسُ شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْهَا.
“উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু শহীদ হওয়া পর্যন্ত কেউ সালাতুদ-দুহার সালাত প্রচলন করে নি। মানুষ বিদআত হিসেবে এ সালাত আদায় করাটা আমার কাছে খুবই পছন্দনীয়।”
হাফেয ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীস থেকে সালাতুদ-দুহা শরি‘আতসিদ্ধ হওয়াকে অস্বীকার করে না, কেননা তার না বলাটা না দেখার প্রমাণ। এটা নয় যে, সে কাজটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই করেন নি অথবা তাঁর না বলার অর্থ হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বক্ষণিক ও মসজিদে জামা‘আতের সাথে প্রকাশ্যে সালাতুদ-দুহা আদায়কে না বলা। কেননা এভাবে প্রকাশ্যে জামা‘আতের সাথে আদায় করাটা সুন্নতের বিরোধী। মূল সালাতটা আদায় করা সুন্নত বিরোধী নয়। আর তার একথা আরো শক্তিশালী করে ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীস থেকে। ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
«أَنَّهُ رَأَى قَوْمًا يُصَلُّونَهَا فَأَنْكَرَ عَلَيْهِمْ وَقَالَ إِنْ كَانَ وَلَا بُدَّ فَفِي بُيُوتِكُمْ».
“তিনি কিছু লোককে সালাতুদ-দুহা আদায় করতে দেখে তাদেরকে এভাবে আদায় করতে নিষেধ করলেন। তিনি তাদেরকে বললেন, যদি তোমরা এ সালাত আদায় করতেই চাও তবে ঘরে বসে আদায় করো।”
এসব আলোচনার পর আমাদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, জমহুর ‘আলেম সালাতুদ-দুহার ব্যাপারে যে মত ব্যক্ত করেছেন তাই অধিকতর বিশুদ্ধ ও শক্তিশালী। আল্লামা শাওক্বানী রহ. বলেন, এ সালাত সাব্যস্তের হাদীস এতই বেশী যে, অন্যরা কমপক্ষে মুস্তাহাব বলেছেন। ইমাম হাকিম রহ. সালাতুদ-দুহা সাব্যস্তের ব্যাপারে আলাদাভাবে প্রায় বিশজন সাহাবী থেকে বর্ণনা একত্রিত করেছেন। এমনিভাবে ইমাম সুয়ুতী রহ. ও আলাদাভাবে একখন্ডে হাদীস একত্রিত করেছেন। এতে তিনি যেসব সাহাবীরা এ সালাত আদায় করেছেন তাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে: আবু সাঈদ খুদুরী, তাঁর থেকে সাঈদ ইবন মানসুর ও আহমদ ইবন হাম্বল এ সালাত সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।  আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা, তাঁর থেকে সাঈদ ইবন মানসূর, ইবন আবী শাইবা এ সালাত সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।  আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহুর থেকে ইবন আবু শাইবা, আব্দুল্লাহ ইবন গালিব এ সালাত সম্পর্কিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবু নু‘আইম এসব হাদীস তার কিতাবে বর্ণনা করেছেন।
সাঈদ ইবন মানসূর রহ. হাসান রহ. বর্ণনা করেন, 
أَنَّهُ سُئِلَ: هَلْ كَانَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  يُصَلُّونَهَا؟ فَقَالَ: نَعَمْ، كَانَ مِنْهُمْ مَنْ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، وَمِنْهُمْ مَنْ يُصَلِّي أَرْبَعًا، وَمِنْهُمْ مَنْ يَمُدُّ إلَى نِصْفِ النَّهَارِ.
“তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীরা কি এ সালাত আদায় করেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ, তারা এ সালাত আদায় করেছেন। কেউ দু রাআ‘আত, কেউ চার রাকা‘আত, কেউ আবার দ্বিপ্রহর পর্যন্ত দীর্ঘ করতেন।”
সাঈদ ইবন মানসূর রহ. তাঁর সুনানে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,
طَلَبْتُ صَلَاةَ الضُّحَى فِي الْقُرْآنِ فَوَجَدْتُهَا هَهُنَا ﴿ يُسَبِّحۡنَ بِٱلۡعَشِيِّ وَٱلۡإِشۡرَاقِ ١٨ ﴾ [ص : ١٨]  
“আমি সালাতুদ-দুহা সম্পর্কে কুরআনে খোঁজ করলাম। ফলে এ আয়াতে এ সালাত সম্পর্কে পাই, 
﴿يُسَبِّحۡنَ بِٱلۡعَشِيِّ وَٱلۡإِشۡرَاقِ ١٨ ﴾ [ص : ١٨]  
“আমি পর্বতমালাকে অনুগত করেছিলাম, তার সাথে এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় আমার তাসবীহ পাঠ করত।” [সূরা: সোয়াদ: ১৮] 
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
إنَّ صَلَاةَ الضُّحَى لَفِي الْقُرْآنِ وَمَا يَغُوصُ عَلَيْهَا إلَّا غَوَّاصٌ فِي قَوْله تَعَالَى: ﴿ فِي بُيُوتٍ أَذِنَ ٱللَّهُ أَن تُرۡفَعَ وَيُذۡكَرَ فِيهَا ٱسۡمُهُۥ يُسَبِّحُ لَهُۥ فِيهَا بِٱلۡغُدُوِّ وَٱلۡأٓصَالِ ٣٦ ﴾ [النور : ٣٦]  
“সালাতুদ-দুহা আল-কুরআনে রয়েছে। গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছাড়া তা বুঝতে পারে না। এটা আল্লাহর এ বাণীর মধ্যে রয়েছে, 
﴿فِي بُيُوتٍ أَذِنَ ٱللَّهُ أَن تُرۡفَعَ وَيُذۡكَرَ فِيهَا ٱسۡمُهُۥ يُسَبِّحُ لَهُۥ فِيهَا بِٱلۡغُدُوِّ وَٱلۡأٓصَالِ ٣٦ ﴾ [النور : ٣٦]  
“সেসব ঘরে যাকে সমুন্নত করতে এবং যেখানে আল্লাহর নাম যিক্র করতে আল্লাহই অনুমতি দিয়েছেন। সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর তাসবীহ পাঠ করে।” [সূরা: আন-নূর: ৩৬]
‘আওন আল-‘উকাইলী রহ. নিম্নোক্ত আল্লাহর বাণী সম্পর্কে বলেন,  
﴿فَإِنَّهُۥ كَانَ لِلۡأَوَّٰبِينَ غَفُورٗا ٢٥ ﴾ [الاسراء: ٢٥]  قَالَ: الَّذِينَ يُصَلُّونَ صَلَاةَ الضُّحَى
 “যদি তোমরা নেককার হও তবে তিনি তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারীদের প্রতি অধিক ক্ষমাশীল।” [সূরা: আল-ইসরা: ২৫] তিনি বরেন, যারা সালাতুদ-দুহা আদায় করে। 

SAZU

SAZU

No comments:

Post a Comment

Thank You

Powered by Blogger.