তাহলে সালাতুল আউয়াবীন সম্পর্কে কোনটি সহীহ মত?
আমরা সকলেই জানি যে, ইবাদত হলো তাওকিফী তথা আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন এবং যেভাবে বলেছেন সেভাবে আদায় করা। এতে নিজের মনগড়া কোনো মত বা দুর্বল ও জাল হাদীস দিয়ে দলিল পেশ করে কিছু বাড়ানো বা কমানো যাবে না। উক্ত আলোচনার দ্বারা এটা স্পষ্ট হলো যে, সালাতুল আউয়াবীনের ব্যাপারে মোট চারটি মত পাওয়া যায়।
(Islamic post) |
প্রথম মতের অনুসারীরা বলেছেন,
মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে আদায়কৃত ছয়, চার বা দু রাকা‘আত সালাত। কিন্তু আমরা তাদের দলিলকৃত প্রত্যেকটি হাদীসের তাখরীজে উল্লেখ করেছি যে, তাদের দলিলসমূহ সবই দ‘য়ীফ। একটিও সহীহ হাদীস পাওয়া যায় না। ইমাম তিরমিযী রহ. এর বর্ণিত একটি হাদীস পাওয়া যায়, তাতে হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে মাগরিবের পূর্বে গিয়েছিল। তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মাগরিবের সালাত আদায় করেছেন এবং ইশা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সময় নফল সালাতে ব্যস্ত ছিলেন। ফলে তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আলোচনা ও দো‘আ-প্রার্থনা করতে পারেন নি। কিন্তু এ হাদীসে এ কথা উল্লেখ নেই যে, সেটা আউয়াবীনের সালাত ছিল; বরং আমরা বলতে পারি এটা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস অনুযায়ী নফল সালাত আদায় করেছেন।
দ্বিতীয় মতের অধিকারীরা সালাতুল আউয়াবীন ও দুহাকে একই সালাত বলেছেন। তারা চাশতের সালাতকেও আউয়াবীন বলেছেন। মূলত সূর্যোদয়ের পরপরই আউয়াবীনের সালাত আদায় করলে তাঁকে চাশতের সালাত বলে। আর সূর্য পূর্ণরূপে আকাশে উদিত হলে যখন উটের বাচ্চা মায়ের থেকে পৃথক হয়ে যায় তখন এ সালাত আদায় করলে তা দুহার সালাত বলে।
অন্যদিকে যারা উভয় মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ের সালাত ও দুহার সালাত উভয়টিকেই আউয়াবীনের সালাত মনে করেন তাদের এ ব্যাপারে কুরআনের বা সহীহ হাদীসের কোনো দলিল নেই।
আর চতুর্থ দলের দলিলটি দ‘য়ীফ ও অধিকাংশ সহীহ হাদীসের বিপরীত বলে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
মোদ্দাকথা হলো, অনেকগুলো সহীহ হাদীস প্রমাণ করে যে, সূর্যোদয় থেকে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত তথা যোহরের পূর্ব পর্যন্ত আদায়কৃত সালাতকে আউয়াবীনের সালাত বলে। এটাই অধিকাংশ আলেমের মত। ইবাদতের ক্ষেত্রে সহীহ হাদীস পাওয়া সত্ত্বেও দ‘য়ীফ হাদীসের ওপর ‘আমল করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
সালাতুল আউওয়াবীন পর্ব-১১ (Islamic post)
No comments:
Post a Comment
Thank You