Breaking News
recent

islamic post....সালাত আদায়ের পদ্ধতি পর্ব-২৩ -----শেষ

৩২. সুনানে রাওয়াতিবগুলো পড়বে। কারণ, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও ফজরের পূর্বে দু’রাকাত কখনো ত্যাগ করতেন না”[1] উম্মুল মুমিনিন উম্মে হাবিবা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শোনেছি: “যে ব্যক্তি দিন ও রাতে বার রাকাত সালাত পড়বে, এর পরিবর্তে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন”অপর বর্ণনায় আছে: “এমন কোন মুসলিম বান্দা নেই যে প্রতি দিন বার রাকাত নফল সালাত আদায় করে, কিন্তু আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন না, অথবা তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করা হবে না”[2] এর ব্যাখ্যায় ইমাম তিরমিযি বাড়িয়ে বলেন: “চার রাকাত জোহরের পূর্বে ও দু’রাকাত জোহরের পর, দু’রাকাত মাগরিবের পর, দু’রাকাত এশার পর ও দু’রাকাত ফজরের পূর্বে”[3]
আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দশ রাকাত মুখাস্ত করেছি: দু’রাকাত জোহরের পূর্বে ও দু’রাকাত জোহরের পর, মাগরিবের পর দু’রাকাত তার ঘরে, এশার পর দু’রাকাত তার ঘরে এবং ফজরের পূর্বে দু’রাকাত” অপর বর্ণনায় আছে: “জুমার পর দু’রাকাত তার ঘরে”[4]
অতএব, সুনানে রাওয়াতেব দশ রাকাত, যেমন ইব্‌ন ওমর বলেছেন, অথবা বার রাকাত যেমন উম্মে হাবিবা ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেছেন। আমাদের শায়খ আল্লামা ইব্‌ন বাযকে বলতে শোনেছি: “যারা ইব্‌ন ওমরের হাদিস গ্রহণ করেছে, তারা বলে সুন্নত দশ রাকাত, আর যারা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদিস গ্রহণ করে, তারা বলে সুন্নত বারো রাকাত। ইমাম তিরমিযির ব্যাখ্যা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসকে শক্তিশালী করে, আর উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিস এসব সুন্নতের ফযিলত বর্ণনা করে। হয়তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো বার রাকাত পড়েছেন, যেমন আয়েশা ও উম্মে হাবিবার হাদিসে আছে, কখনো দশ রাকাত পড়েছেন, যেমন ইব্‌ন ওমর থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে। যখন আগ্রহ ও স্পৃহা থাকে বারো রাকাত পড়বে, আর যখন ব্যস্ততা থাকে দশ রাকাত পড়বে। তবে সবগুলো সুন্নতে রাওয়াতেব, হ্যাঁ পূর্ণতা হচ্ছে আয়েশা ও উম্মে হাবিবার হাদিস মোতাবিক বারো রাকাত পড়া”[5]
যদি কোন মুসলিম জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও জোহরের পর চার রাকাত পড়ার ইচ্ছা করে আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেবেন। যেমন উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শোনেছি, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও জোহরের পর চার রাকাত নিয়মিত পড়বে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুনের জন্য হারাম করে দেবেন”[6]
যদি কোন মুসলিম আসরের পূর্বে চার রাকাত পড়ার ইচ্ছা করে, আল্লাহ তার উপর রহম নাজিল করবেন। ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«رحم الله امرءًا صلى أربعًا قبل العصر»
“আল্লাহ সে ব্যক্তির উপর রহম করুন, যে আসরের পূর্বে চার রাকাত সালাত আদায় করল”[7]

সমাপ্ত



[1] বুখারি: (১১৮২)
[2] মুসলিম: (৭২৮)
[3] তিরমিযি: (৪১৫)
[4] বুখারি: (১১৮), মুসলিম: (৭২৯)
[5] বুলুগুল মারামের (৩৭৪) নং হাদিসের ব্যাখ্যার সময় তার মুখে এ কথাগুলো আমি শ্রবণ করি।
[6] আহমদ: (৬/৩২৬), আবু দাউদ: (১২৬৯), তিরমিজি: (৪২৭), নাসায়ি: (১৮১৪), ইব্‌ন মাজাহ: (১১৬০), সহিহ সুনানে ইব্‌ন মাজাহ: (১/১৯১)। আমি আল্লামা ইব্‌ন বাজ রহ. কে বুলুগুল মারামের (৩৮১) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: “এ হাদিসের সনদ খুব সুন্দর, তবে ইব্‌ন ওমর ও আয়েশার হাদিসে যা রয়েছে, তার উপর রাসূলের নিয়মিত আমল ছিল”আমি বলি: আমি তাকে জীবনের শেষ বয়সেও দেখেছি, তিনি বসে বসে জোহরের আগে চার রাকাত ও জোহরের পরে চার রাকাত পড়তেন, আল্লাহ তার উপর রহম করুন।
[7] আহমাদ: (২/১১৭), আবু দাউদ: (১২৭১), তিরমিযি: (৪৩০), সহিহ ইব্‌ন খুজাইমা: (১১৯৩), সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/২৩৭)। আমি আল্লাহ ইব্‌ন বাজ রহ. কে বলতে বুলুগুল মারামের (৩৮২) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: “এ হাদিসের সনদ গ্রহণ করাতে কোন সমস্যা নেই, এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, আসরের পূর্বে চার রাকাত পড়া বৈধ ও সুন্নত, তবে এটা সুন্নতে রাতেব নয়, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো এটা নিয়মতি পড়েননি। আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের পূর্বে দু’রাকাত পড়তেন, এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আসরের পূর্বে দু’রাকাত অথবা চার রাকাত পড়া মুসলিমদের জন্য মুস্তাহাব”। 
SAZU

SAZU

No comments:

Post a Comment

Thank You

Powered by Blogger.